Tuesday, September 12, 2023

  সোমব্রেরো ফল আউট


রিচার্ড ব্রটিগান


অ্যাপার্টমেন্ট

 

‘তোমার অ্যাপার্টমেন্টটা সুন্দর’, মেয়েটি বলল। সে এমন ভাবে কথাটা বলল যেন তা খুব জরুরি। ছেলেটি অবাক হলো। সে আরেকবার ভালো করে তাকালো নিজের অ্যাপার্টমেন্টটার দিকে, সেকি কিছু মিস করে গেছে, গত পাঁচ বছর ধরে সে এখানে আছে কিন্তু তার একই মনে হলো সবকিছু।

‘ধন্যবাদ’, সে উত্তর দিলো।

মেয়েটি আর কিছু বলল না, কোচে গিয়ে বসল।

ছেলেটি ভাবল মেয়েটি হয়ত কিছু বলবে। এটা ভাবার যদিও কোনো কারণ ছিল না, তবু সে ভাবল। ভেবে সে বহু সময় নষ্ট করেছে অনেক বিষয় নিয়ে যা আর এগোয়নি শেষমেশ। অনেক সময়ই তার মন পপকর্ন বানানোর মেশিনের মতো সামান্য বিষয় নিয়েও পটর পটর করেছে।

মেয়েটি একটি শব্দও উচ্চারণ করল না।

ছেলেটি তাকাল মেয়েটির মুখের দিকে। তার শরীরের আকৃতির মতো তার মুখটাও ছোট আর কোমল। তার গায়ের রং প্রায় সাদা। কিছু কিছু জাপানিদের গায়ের রঙ ফ্যাকাসে। মেয়েটি সেই দলে পড়ে। আবার সে ভাবে আচ্ছা ওই সরু চোখ দিয়ে মেয়েটি কি দেখতে পাচ্ছে ঘরের সবকিছু।

মেয়েটি দেখতে পাচ্ছিল।

তারপর সে মেয়েটিকে একটি প্রশ্ন করে যদিও সে তার উত্তর জানত তবু করে প্রশ্নটা, আসলে এই প্রশ্নটা মেয়েদের করলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়ে কারণ সে জানে তারা কী উত্তর দেবে।

‘তুমি আমার কো্নো বই পড়েছ?’

সে মেয়েটির হ্যাঁ শোনার জন্য অপেক্ষা করে। সে নিজের মাথার ভেতরে মেয়েটির গলা শুনতে পায় যেন, সে হ্যাঁ বলছে। মেয়েটির গলা সুরেলা। ও হ্যাঁ বললে মনটা ভালো হয়ে যাবে। আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে যাবে।  

মেয়েটি তারপর ছেলেটির দিক থেকে চোখ না সরিয়ে খুব ছোট্ট কিন্তু মাধুর্য ভরা ভঙ্গিতে মাথা নাড়াল। ছেলেটি স্রেফ বোবা বনে যায়। সে ভাবতেই পারেনি যে মেয়েটা এটা করতে পারে। তার কোনো দ্বিতীয় পন্থা ভাবা ছিল না। সে মেয়েটির দিকে হাঁ করে চেয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তার সমস্ত চিন্তা মাথা ছেড়ে পালিয়েছে, ডিপ্রেশনের সময় ব্যাঙ্ক থেকে যেভাবে ডাকতরা পালাত সেইভাবে। যেটুকু সময় সে ওভাবে দাঁড়িয়ে ছিল কিছু ঘটার আগে, তার মনে হয় যেন দশটা বছর পেরিয়ে গেছে।    

মেয়েটি তার একটা হাত যা তার কোলের উপর ভাঁজ করা ছিল তা নিয়ে নিজের থুতনিতে একটা লম্বা সাদা আঙুল রাখল। মেয়েটির মুখভঙ্গির কোনো পরিবর্তন ছিল না। তার একটা লম্বা সাদা আঙুল তার থুতনি ছুঁয়ে ফিরে এলো ফের নিজের কোলে।  

সোফায় বসার পর থেকে মেয়েটি ছেলেটির দিক থেকে একবারও দৃষ্টি সরায়নি।

এত সময় ধরে কোনো মেয়েই তার দিকে তাকিয়ে থাকেনি। সে তেমন সুন্দর পুরুষ নয়। কিন্তু মেয়েটি এমন ভাবে তার দিকে চেয়ে আছে বলে তার মনে হলো সে সুপুরুষ।          

                      

   


No comments:

Post a Comment