Thursday, August 31, 2023

 সোমব্রেরো ফল আউট 



রিচার্ড ব্রটিগান


মেয়ে

 

এটার থেকে বেরোবার একটা উপায় থাকতেই হবে।

তারপর সে বুঝতে পারল কী করতে হবে। সে একটি মেয়েকে ফোন করল। মেয়েটি ছেলেটি ফোন করেছে বলে খুশিই হলো। ‘তুমি ফোন করেছ দেখে ভালো লাগছে’, সে বলল। ‘তুমি চলে এসে আমার সাথে রাতটা কাটালে ভালো লাগবে। তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে’।

মেয়েটি কাছেই থাকে।

মেয়েটির গলায় ছিল প্রেমের সুর।

অনেক কালই তারা এক উদ্দেশ্যহীন প্রেমিক প্রেমিকা আর মেয়েটি বিছানায় দারুণ। সে ছেলেটির লেখা সমস্ত বইই পড়েছে আর সে খুবই বুদ্ধিমান কারণ সে কখনই ছেলেটির সাথে তা নিয়ে কথা বলে না। ছেলেটি নিজের লেখা বই নিয়ে কথা বলতে ভালোবাসে না আর মেয়েটি কখনই তার বই নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করেনি। কিন্তু তার সব বইই মেয়েটির বইয়ের তাকে আছে। তার সমস্ত বই রাখার মেয়েটির এই অভিপ্রায় তার বেশ পছন্দ আরো বেশি পছন্দ হয় এটা যে তারা প্রায় পাঁচ বছরের প্রেমিক প্রেমিকা কিন্তু কোনোদিনই মেয়েটি তার বই নিয়ে প্রশ্ন করেনি। সে লিখেছে, মেয়েটি পড়েছে আর তারা বিছানায় ভালোই লাগিয়েছে।

মেয়েটি ঠিক তার মতো শারীরিক না হলেও  পুষিয়ে দিয়েছে অন্যভাবে।

‘তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে’, মেয়েটি ফোনে বলেছিল।

‘আসছি কিছুক্ষণের মধ্যে’, ছেলেটি উত্তর দিয়েছিল।

‘আমি আগুনে একটা কাঠের চ্যালা দিয়ে রাখব’, মেয়েটি বলেছিল।

ছেলেটির এখন অনেকটা ভালো লাগছে।

হয়ত ফের সবকিছু ঠিকঠাক হবে।

হয়ত এত নিরাশ হওয়ার কিছু হয়নি।

সে গায়ের কোটটা চাপিয়ে দরজা দিয়ে বেরল।

আসলে সে এর কোনোটাই করেনি কারণ সে ভাবছিল শুধু, ভাবছিল মনে মনে এসব নিয়ে। কোনোটাই আসলে বাস্তব নয়। সে টেলিফোনটা ছোঁয়নি আর এরকম কোনো মেয়ে আসলে নেই।

সে আসলে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল ওয়েস্ট পেপার বাস্কেটে পড়ে থাকা ছেঁড়া কাগজের টুকরোগুলোর দিকে। সে খুব মন দিয়ে  তাকিয়ে দেখছিল টুকরো কাগজগুলো অতলের সাথে কীভাবে ভাব জমাচ্ছে। যেন তাদের নিজস্ব জীবন আছে। এটা খুবই বড় সিদ্ধান্ত তবু কাগজের টুকরোগুলো ঠিক করল ছেলেটিকে ছাড়াই তারা এগোবে।


Wednesday, August 30, 2023

    সোমব্রেরো ফল আউট



রিচার্ড ব্রটিগান





 

অরিগ্যামি

 

সে সোমব্রেরো নিয়ে লেখা কাগজের টুকরোগুলো কুড়িয়ে নিয়ে ফেলে দিলো একটা খালি ওয়েস্ট পেপার বাস্কেটে যা ছিল এক তলহীন অন্ধকার। কিন্তু সাদা কাগজের টুকরোগুলো অলৌকিকভাবে একটা তল খুঁজে পেল আর পড়ে রইল সেখানে আবছা এক উজ্জ্বলতা নিয়ে উপর দিকে মুখ করে যেন এক উল্টো অরিগ্যামি অতলে শুয়ে আছে।

সে জানত না যে মেয়েটি একা ঘুমোচ্ছে।

 

   সোমব্রেরো ফল আউট


রিচার্ড ব্রটিগান


শহরতলী

 

ইউকিকো পাশ ফিরে শুলো।

যা খুবই সহজ সাধারণ।

তার ছোটখাট শরীরের এই সামান্য নড়াচড়া।

আর তার চুলও তার সাথে পাশ ফিরল মেয়েটির স্বপ্ন দেখতে দেখতে।

একটা বেড়াল, মেয়েটির বেড়াল তার সাথে বিছানায় শুয়ে ছিল। মেয়েটির নড়াচড়ায় তার ঘুম ভেঙ্গে গেল, সে চেয়ে দেখল মেয়েটি খুব ধীরে পাশ ফিরছে। মেয়েটির নড়াচড়া থেমে গেলে সে আবার ঘুমিয়ে পড়ল।

বেড়ালটা একটা কালো বেড়াল আর সেটা হতে পারত তার চুলের একটা শহরতলী।

 

 

  

Monday, August 28, 2023

  সোমব্রেরো ফল আউট



রিচার্ড ব্রটিগান






শ্বাস প্রশ্বাস

 

প্রথমবার যখন তার মেয়েটি্র সাথে দেখা হলো এক রাতে সানফ্রানসিস্কোয় সে তখন পুরো মাতাল। মেয়েটি কাজের পর তার অফিস কলিগদের সাথে একটি পানশালায় গিয়েছিল। সে মদ খেতে পছন্দ করত না কারণ টিপিক্যাল জাপানিদের মতোই মদ খেলেই তার চড়ে গিয়ে বমি হতো আর তাছাড়া মদ খাওয়ার পর তার শরীরে যে অনুভূতি হতো তা তার ভালো লাগত না। তার মাথা ঘুরত।

তাই সে পানশালায় খুব একটা বেশি যেত না।

সে রাতে কাজ শেষ করার পর মেয়েটি খুব ক্লান্ত ছিল কিন্তু তার দু কলিগ তাকে টেনে নিয়ে গেল কাছের এক পানশালায় যেখানে তরুণ প্রজন্ম ভিড় জমায়।

যখন পানশালার উঁচু একটা টুলে বসে সে যখন ঘুরে তাকাল তখন সে পুরো মাতাল, যে অভিজ্ঞতা তার নতুন নয়, আর দেখল মেয়েটিকে তার ইউনিফর্ম পরে বসে থাকতে, সে কী আর জানত যে ঠিক দু বছর পর তাকে এভাবে মেঝেতে বসে থাকতে হবে ছড়ানো টুকরো কাগজগুলোর ভেতর যাতে রয়েছে আকাশ থেকে ঝরে পড়া সোমব্রেরোর কথা আর তার দু চোখ বেয়ে গড়িয়ে চলেছে জলধারা পাহাড়ের কোলে এক খাঁড়ির মতো আর তার কোনোদিনই কোথাও যাওয়ার নেই। আর তার জীবন ক্লান্ত হয়ে পড়বে তাকে শ্বাস নিতে নিতে একদিন।  

 

Sunday, August 27, 2023

 সোমব্রেরো ফল আউট



রিচার্ড ব্রটিগান




 

ইরেজার

 

জাপানি মেয়েটি ঘুমিয়েই চলল।

ইউকিকো বিছানায় গেছিল খুব ক্লান্ত হয়ে। একটা ব্যাস্ত দিন গেছে তার। অফিসে কাজের সময় সে শুধু ভেবেছে কখন বাড়ি গিয়ে ঘুমোবে। আর এখন সে এখানে, বাড়ি ফিরে ঘুমোচ্ছে।

সে একটা ছোট্ট স্বপ্ন দেখেছিল তার ছেলেবেলা নিয়ে।সেই স্বপ্নটা তার মনে থাকবে না যখন সকালে তার ঘুম ভাঙ্গবে বা আর কখনোই সেটা তার মনে পড়বে না।

সেটা হারিয়ে গেছে চিরকালের জন্য।

যখন সে স্বপ্নটা দেখছিল তখনই তা চলে গেছে।

স্বপ্নটা যখন দেখা দিয়েছিল তখনই তা মুছে ফেলে নিজেকে।

 

   

 

Friday, August 25, 2023

 সোমব্রেরো ফল আউট


রিচার্ড ব্রটিগান





নাবিক

 

বাদবাকি রাতটা সে কী করবে? নভেম্বরের ১০:১৫ তখন। সে রাত এগারোটার খবর দেখতে চাইছিল না। তার খিদেও পায়নি। সে মদ খেতে চাইছিল না। সে জানত যদি সে এখন একটা বই পড়তে চেষ্টা করে তাহলে বইয়ের পাতাগুলো তার চোখের জলে সাঁতরাতে শুরু করবে।

তাই সে ভাবছিল মেয়েটি নিয়ে, যে অন্য কারো সাথে লাগাচ্ছে। সে আরেকটা পুরুষের কথা ভাবছিল, একটা নামহীন মুখ যার লিঙ্গ প্রবেশ করছে মেয়েটির ভেতর। সে ভাবল  আরেকজন পুরুষের লিঙ্গের চাপে মেয়েটির  চাপা গোঙানি আর দুলুনির কথা। এরকম ভাবনা তার জন্য আদৌ প্রশান্তির ছিল না তবু সে আঁকড়ে রইল ওই ভাবনাতেই যেভাবে এক ডুবন্ত নাবিক আঁকড়ে ধরে এক খণ্ড কাঠ দিগন্তহীন মাঝ সমুদ্রে।

তারপর সে তাকাল তার পায়ের কাছে পড়ে থাকা কাগজের টুকরোগুলোর দিকে। কেন একটা সোমব্রেরো ঝরে পড়বে আকাশ থেকে? কাগজের টুকরোগুলো তাকে সে কথা বলতে পারবে না। সে মাটিতে বসে পড়ল এর মাঝে। 

Thursday, August 24, 2023

 সোমব্রেরো ফল আউট





রিচার্ড ব্রটিগান


ভূত

 

মাটিতে ছড়ানো কাগজের টুকরোগুলোর দিকে  সে তাকিয়েছিল যেখানে আকাশ থেকে বিনাকারণে ঝরে পড়া একটা সোমব্রেরোর কথা লেখা হয়েছিল আর সেটা দেখে যে কারণেই হোক তার কান্না বেড়ে গিয়েছিল।

মেয়েটা কার সাথে শুচ্ছে এখন? সে ভাবছিল আর তার চোখ দুটোয় কান্নার স্রোত তেড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছিল গাল বেয়ে ঝরবে বলে, যেন দুটো চোখের কান্নার প্রতি্যোগিতা চলছে। কান্নার অলিম্পিকে যেন যোগ দিয়েছে তারা, সোনার মেডেলের স্বপ্ন তাদের চোখে।

সে কল্পনা করছিল মেয়েটি তার বিছানায় একজন পুরুষের সাথে আছে। পুরুষটি নিশ্চই তার প্রেমিক। যে পুরুষটির কথা সে কল্পনা করেছিল তার গায়ের বা চুলের সঠিক কোনো রঙ নেই বা কেমন সে দেখতে তারও অস্তিত্ব ছিল না। তার কাল্পনিক প্রেমিকের  হাড়গোড়, মাংস বা রক্ত কিছুই ছিল না। যে পুরুষটিকে সে মেয়েটির পাশে বিছানায় শুইয়েছিল সে ছিল শুধুই একটা ভূতের মতো শক্তিমান যার একটা লিঙ্গ আছে।

সে হয়ত, যদি তা সম্ভব হয়, আরো বেশি কাঁদত যদি সে জানতে পারত মেয়েটি একাই ঘুমোচ্ছে। এবং এটা তাকে আরো বেশি দুঃখ দিত নিশ্চিত।  

 

 

 

 

Monday, August 21, 2023

 সোমব্রেরো ফল আউট




রিচার্ড ব্রটিগান


জাপানি

 

ইউকিকোর ঘুমের সাথে তার লম্বা জাপানি চুলও ঘুমোয় তার চারধারে। সে জানত না যে তার চুলও ঘুমোচ্ছিল। প্রোটিনেরও ঘুমের দরকার আছে। সে ওভাবে ভাবেনি। তার চিন্তাগুলো আসলে ছিল খুবই সাধারণ।

সে সকালবেলা চুল আঁচড়েছেঘুম থেকে উঠে সে প্রথমে ওটাই করে। সে সবসময় খুব যত্নকরে চুল আঁচড়ায়। সে কখনো কখনো মাথার উপর চূড়ো করে প্রাচীন জাপানিদের মতো খোঁপা বেঁধে রাখে। কখনো সেটাকে লম্বা ছেড়ে রাখে, যা ছুঁয়ে ফেলে তার নিতম্ব।

সানফ্রানসিসকোয় সন্ধ্যে দশটার কিছুটা পরের সময়। তার বিছানার পাশের জানালায় বৃষ্টির ছাঁট এসে পড়ছিল।কিন্তু সে তার শব্দ টের পেল না কারণ সে ছিল গভীর ঘুমে।  চিরকালই তার ঘুম বেশ গভীর আর মাঝে মাঝে সে ঘুমোত টানা অনেক্ষণ ধরে, প্রায় বারো ঘণ্টা টানা। সে ব্যাপারটাকে উপভোগ করত যেনবা সে হাঁটতে বেরিয়েছে বা একটা দারুণ রান্না করছে। সে আসলে খেতেও ভালোবাসে।

যখন অক্ষর ভর্তি কাগজটাকে সে ছিঁড়ে ফেলছিল যা লেখা একটা সোমব্রেরো নিয়ে যা ঝরে পড়েছে আকাশ থেকে তখন মেয়েটি ঘুমোচ্ছিল। তার সাথে ঘুমোচ্ছিল তার মাথার চুলও, তার পাশে দীর্ঘ একটা অন্ধকার হয়ে। তার চুল স্বপ্ন দেখছিল সকালে যত্ন নিয়ে আঁচড়াবার ঘটনাটুকু। 

Saturday, August 19, 2023

 সোমব্রেরো ফল আউট





রিচার্ড ব্রটিগান

সোমব্রেরো

 

একটা সোমব্রেরো আকাশ থেকে খসে, পড়ল এসে শহরের প্রধান সড়কে। মেয়র আর তার পিসতুত ভাই এবং চাকরি চলে যাওয়া একটা লোকের সামনে। মুরুভূমির হাওয়ায় দিনটা ঘঁষে মেজে পরিষ্কার হয়ে ছিল। আকাশটা ছিল নীল। মানুষের চোখের নীলের মতো, যা অপেক্ষা করে আছে কোনো কিছু ঘটার জন্যআকাশ থেকে এই মেক্সিকান টুপিটা খসে পড়ার কোনো কারণই ছিল না। কোনো প্লেন বা হেলিকপ্টারও যাচ্ছিল না মাথার উপর দিয়ে বা কোনো ধর্মীয় ছুটির দিনও সেটা ছিল না।

কান্নার প্রথম ফোঁটা তৈরি হলো তার ডান চোখে। ওই চোখটাই চিরকাল প্রথম কাঁদতে শুরু করে। তারপর শুরু করে বাঁ চোখটা। ব্যাপারটা তার কাছে ইন্টারেস্টিং হতে পারত যদি সে জানত তার ডান চোখটাই আগে কান্না শুরু করে। বাঁ চোখটা ডান চোখের কান্না শুরু করার পর এত দ্রুত কান্না শুরু করে যে সে বুঝতেই পারে না কোন চোখটা আগে কাঁদতে শুরু করেছে, কিন্তু চিরকালই ডান চোখটাই শুরু করে।

সে ভালোই অনুভব করতে পারে কিন্তু এতটাও অনুভব করতে পারে না এটা বুঝতে যে কোন চোখটা প্রথম কাঁদতে শুরু করেছিল। মানে যদি কেউ এই ছোট একটা তথ্য কাজে লাগাতে পারে অনুভবের ব্যাখ্যায়।

‘ওটা কি একটা সোমব্রেরো?’ মেয়র জিজ্ঞাসা করে। মেয়ররা চিরকাল প্রথম কথা বলে, বিশেষত যদি তারা আর কোনো রাজনৈতিক অবস্থানে পৌঁছতে না পেরে একটা ছোটো শহরের মেয়র হয়ে থেকে যায়।   

‘হ্যাঁ’, বলে ওঠে তার পিসতুতো ভাই, যে নিজেও মেয়র হতে চায়।

 চাকরি চলে যাওয়া লোকটা কিছুই বলে না। সে আসলে দেখতে চাইছিল  কোনদিকে হাওয়া বয়। সে সাঁকো নাড়াতে চাইছিল না। আমেরিকায় চাকরি না থাকাটা হাসির ব্যাপার নয়।

‘ওটা আকাশ থেকে পড়েছে’ বলল মেয়র স্বচ্ছ নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে।

‘হ্যাঁ’ বলল তার পিসতুতো ভাই।

যে লোকটার চাকরি চলে গেছে সে কিছুই বলল না কারণ তার একটা চাকরি চাই। চাকরি পাবার যে ক্ষীণ আসাটুকু আছে সেটা সে গুবলেট করে ফেলতে চাইল না। বড় বড় লোকদের কথা বলতে দেওয়া সবার জন্য ভালো।

তিনটি লোকই আকাশ থেকে কেন সোমব্রেরো ঝরে পড়ল তার কারণ খঁজছিল কিন্তু তারা কোনো কারণই খুঁজে পেল না, এমনকি যে লোকটার চাকরি চলে গেছে সেও কোনো কারণ খুঁজে পেল না

সোমব্রেরোটা দেখে মনে হচ্ছিল একদম নতুন

ওটা রাস্তায় পড়ে ছিল আর তার চূড়ো আকাশের দিকে তাক করা

সাইজ- /

' আকাশ থেকে টুপি কেন ঝরে পড়ছে'? বলল মেয়র

' আমি জানি না' উত্তর দিল তার পিসতুত ভাই

যে লোকটার চাকরি চলে গেছিল সে ভাবছিল টুপিটা তার মাথায় ফিট করবে কিনা

এখন দুটো চোখই কাঁদছে

হে ভগবান...

সে টাইপরাইটারের দিকে এগলো এমন ভাবে যেন সে একজন মুর্দাফরাশ যেন সে একটা কফিনে একজন মৃত মানুষের প্যান্টের চেন টেনে আঁটকে দিচ্ছে আর টেনে নিচ্ছে একটা  কাগজের পাতা ইতিমধ্যে যা লেখা হয়েছে সব সমেত শুধু বাদ গেছে তার কান্নাটুকু, কারণ সে যে কাঁদছে সে কথা সে জানেই না কারণ ইদানীং সে এতবার কেঁদেছে যে ব্যাপারটা দাঁড়িয়েছে এক গ্লাস জল খাবার মতো যা আপনি হঠাৎ খেয়ে ফেলেন তেষ্টা না পেলেও আর পরে তা মনে থাকে না আপনার।  

সোমব্রেরো নিয়ে আপনি এখানে যা পড়েছেন সেই কাগজটা সে ছিঁড়ে ফেলে। সে খুব সাবধানে ছোটো ছোটো টুকরো করে কাগজটার তারপর ছুঁড়ে ফেলে দেয় মেঝেতে।

সে কাল আবার লিখতে শুরু করবে অন্যকিছু যার সঙ্গে আকাশ থেকে ঝরে পড়া সোমব্রেরোর কোনো সম্পর্ক নেই।

তার কাজ হলো বই লেখা। সে একজন বিখ্যাত আমেরিকান কৌতুক কাহিনী রচয়িতা। এরম কোনো বইয়ের দোকান পাওয়া মুশকিল যেখানে তার একটাও কোনো বই নেই।

তাহলে সে কাঁদছে কেন?

খ্যাতি কি যথেষ্ট নয়?

উত্তরটা আসলে খুব সোজা।

তার জাপানি বান্ধবী তাকে ছেড়ে চলে গেছে।

সেটাই কারণ এই কান্নাকাটির যা তার চোখে শুরু হয়েছিল যা সে আর মনে করতে পারে না শুধু মনে থাকে এই কান্না, জাপানি মেয়েটি তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর যা প্রায় একটা রোজকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এক এক দিন সে এত কাঁদে যে তার মনে হয় সে স্বপ্ন দেখছে।