হোটেলের রিসেপশনে জাহাজ থেকে নেমে রাস্তা পেরিয়ে একটা ছোট্ট বাড়িতে। স্লট
মেশিনে পয়সা ঢুকিয়ে একটা কফি নিয়ে নেটে বসলাম। ইন্টারনেট ফ্রি এখানে। এত কিছুর
মধ্যে আমি আমার কোনো বাংলা কবিতার বই আনিনি। বাংলায় কবিতা পড়তে বললে তো সর্বনাশ।
বাড়িতে ছোটুকে মেল করলাম চট করে কয়েকটা কবিতা স্ক্যান করে পাঠিয়ে দে। রঙিন আরশোলা,
খরকাই টরকাই যেন থাকে। এ দুটো কবিতা এরা সুইডিশে অনুবাদ করেছে। অনুবাদের কাজটা
হেনরি আর বোয়েল দুজনে মিলে করেছে।
পরের দিন সকালে কবিতাগুলোর প্রিন্ট আউট নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম শহরটাতে। ভোরের
দিকে অল্প বরফ পড়েছে। রাস্তাঘাট সাদা হয়ে আছে। তার সঙ্গে তীক্ষ্ণ হাওয়া। গেঞ্জি,
উলিকট, জ্যাকেট ভেদ করে হাড়ে গিয়ে ধাক্কা মারছে যেন। টুপি মাফলার ঢাকা মুণ্ডুটার
যেটুকু অংশ খালি আছে, মনে হচ্ছে যেন কেউ গাল থেকে টেনে ছিঁড়ে নিচ্ছে রক্ত মাংস মেদ।
এখন বুঝতে পারছি কেন হেনরি গতকাল রাতে আমাদের সাথে হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝে উলটো
দিকে ঘুরে দাড়াচ্ছিল, আর সমানে বলছিল, I am not
properly dressed। হাঁটু অবধি চামড়ার জুতো পরা রমণীরা দ্রুত টক টক আওয়াজ তুলে আমার পাশ দিয়ে
চলে যাচ্ছিল। এই ঠাণ্ডায় আম-বাঙালির মতো দুলকি চালে হাঁটাটা অসম্ভব বুঝে আমিও
চলার স্পিড বাড়ালাম।
রাস্তাটার একটা বাঁকের মুখে ন্যাশনাল মিউজিয়াম। সোজা ঢুকে পড়লাম। টিকিট একশো
কুড়ি সুইডিশ ক্রোনা। রাজারাজড়ার আমলের আসবাবপত্র ছাড়া ইন্টারেস্টিং কিস্যু নেই। আর
কাঠের মেঝের ক্যাঁককো ক্যাঁককো করে সমানে আওয়াজ করার প্রবণতায় খানিকটা মজা লাগছিল
বটে। বরং মিউজিয়ামের একতলার বইয়ের দোকানটা দারুণ। তবে বইপত্রের যা দাম ইচ্ছে
থাকলেও ট্রিপের শুরুতেই কেনাকাটার সাহস পেলাম না। সেইতো ফেরার সময় স্টকহোম থেকেই
প্লেন ধরতে হবে তখন ভাবা যাবে।
তেড়ে খিদে পেয়ে গেছিল। ইয়োরোপ চষে ফেলা গৌরবের পই পই মনে পড়ে গেল। খবরদার
হোটেলে ঢুকে খেতে যেও না। প্রচণ্ড দাম। সোজা একটা সুপারমার্কেটে ঢুকে যা দরকার
কিনে নাও। তারপর পার্কে বসে খাও।
এই ঠাণ্ডায় পার্কে বসে খাওয়ার মতো হিমগিরিকা বীর আমি নই। অতএব একটা বড়কা
স্যান্ডউইচ কিনে চালান করলাম কোটের পকেটে। তারপর ঘুরে ঘুরে দেখলাম সারি সারি
দোকান। গ্লোবালাইজেশনের দৌলতে এসব জিনিসই আমাদের কোলকাতার শপিং মলগুলোতেও দেখতে
পাওয়া যায়। পৃথিবীর সমস্ত শপিং মলের ব্র্যান্ড ভাগ্য প্রায় একই।
কাঁটায় কাঁটায় চারটের সময় ফোন। বোয়েল। হ্যালো, তুমি তৈরি? তৈরিই ছিলাম।
গ্রাফিত্তির কালো ঝোলা তুলে বেরিয়ে পড়লাম। ঠাণ্ডা হাওয়ার চোটে নাক চোখ দিয়ে ঝরঝর
করে জল গড়াতে শুরু করল ধারায়। বোয়েল আর আমি গতকাল যে হোটেলটাতে খেয়েছিলাম তার সামনে
দাঁড়িয়ে আছে। আমার হোটেল থেকে সেটা মিনিট পাঁচেকের পথ কিন্তু মনে হচ্ছিল বহু যুগ
ধরে হাঁটছি। নাক মুখের অস্তিত্বই টের পাচ্ছিলাম না। রুমাল নিয়ে জল মুছতে গিয়ে
পেলাম একটা ভার্চুয়াল মুখের অস্তিত্ব। পরে জেনেছি সেদিন ছিল মাইনাস টু। নভেম্বরেই
এই, ডিসেম্বরে কী হয় কে জানে। কোনো ইয়োরোপিয়ানকে বলতে শুনিনি তাদের শীত ভালো লাগে।
এখানে আসার আগে অবধি শীত আমারও ভালো লাগত, এখন আর লাগে না। এই শীত মৃত্যুর মতো
কঠিন।
কালচারাল সেন্টারে পৌঁছে প্রথমেই এক কাপ গরম কড়া কালো কফি অর্ডার দিলাম।
বিরাট এই কালচারাল সেন্টারের লাইব্রেরীতে আমার কবিতা পাঠ। অ্যাটমোশফিয়ারটা একটা ক্ল্যাসিকাল কফি শপের মতো, বই পড়াও চলছে, কফি খাওয়াও। তার সাথে চাইলে হালকা
স্ন্যাক্সও। গরম কালো কফি পেটে পড়তে খানিকটা ধাতস্থ হওয়া গেল। সাউথ আফ্রিকান কবি
গ্যারি কামিস্কির বন্ধু ডারবানের প্রভাসন পিল্লাই অধুনা কর্মসূত্রে স্টকহোমে, তার
আসার কথা আমার কবিতা পাঠে। আমেরিকান লেখক ডগ ম্যাথিউসনের বন্ধু জেলেনারও আসার কথা
এই অনুষ্ঠানে।
শুরুতে ঠিক হলো শর্মী পাণ্ডের শর্ট ফিল্ম ‘মাই হোম’ দেখানো হবে। এখানে
অভিনেতা শুভঙ্কর। ভাবা যায়। পাঁচ মিনিটের এই ফিল্মটি এখন অস্ট্রেলিয়ার কবিতা
প্রজেক্ট Memory Video Project-এ পৃথিবীর অন্যান্য
আরো ১৩টা ফিল্মের সঙ্গে সংকলিত হয়েছে। ফিল্ম দেখানোর পর শুরু হলো অনুষ্ঠান। আমি
একটা করে কবিতা ইংরেজি অনুবাদে পড়ছি আর তার সুইডিশ অনুবাদ পড়ছে সুইডিশ কবি
নাট্যকার বোয়েল শেনলেয়ার। বোয়েল আর হেনরি দুজনে মিলে আমার কবিতা সুইডিশে অনুবাদ
করেছে। বোয়েল হঠাৎ ম্যাজিকের মতো তার ব্যাগ থেকে আমার কয়েকটা বাংলা কবিতার বই বের
করে তার থেকে বাংলা কবিতা পড়তে অনুরোধ করল। প্রাথমিক চমক কাটিয়ে ‘একা একা চুমকুড়ি
একা একা প্রপালশন আরামের’ বইটি থেকে কবিতা পড়তে শুরু করলাম। প্রচ্ছদের মজাটাও
বললাম শ্রোতাদের। বইটার নাম শুরু হচ্ছে ব্যাক কভার থেকে, শেষ হচ্ছে ফ্রন্ট কভারে।
প্রশ্ন এলো তাহলে কি বইটা পেছন থেকে শুরু?
এভাবেই প্রশ্ন উত্তর শুরু হলো। গ্রাফিত্তি কোলকাতার ইংরেজি কাজকর্ম নিয়ে,
আমাদের চিন্তা ভাবনা থেকে শুরু করে কোলকাতার কালীঘাটের কালী অবধি চলল ব্যাপারটা
এবং সেই সূত্রে তন্ত্র, শক্তি, ইন-ইয়াং ফোর্স ইত্যাদি। এরপর আবারো আমরা ফিল্মে
ফিরলাম। শর্মীর 29 minutes of
loneliness. তুমুল হাততালি আর অ্যাপ্রিসিয়েশনে মন ভালো হয়ে যাচ্ছিল।
এবার মঞ্চে এলেন একজন সুইডিশ আর্টিস্ট পনটাস রাউদ। এসে তিনি একটা গল্প বলতে
শুরু করলেন। কীভাবে সংস্কৃত উচ্চারণে বেদ পাঠের সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রের ধ্বণি
মূর্ছনার গতিতে কয়েকজন পেইন্টিং করেছিলেন। সেই Vedakurt
( it is made out of Veda and Kurt, where Kurt means a card but also a picture) তিনি আরেকবার
ব্যাপারটা স্টকহোমের লাইব্রেরীতে করতে চলেছেন। আমি বাংলায় কবিতা
পড়ব আর উপস্থিত আগ্রহী সবাই ছবি আঁকবেন।
টি এস ইলিয়ট তার ওয়েস্ট ল্যান্ড কবিতায় বেদের যে লাইনগুলো ব্যবহার করেছিলেন
সেগুলো আরেকবার আমি উচ্চারণ করলাম –
asto ma sat gamaya
tamaso ma jyotir
gamaya
mrityor ma amritam
gamaya
om shanti, shanti, shanti.
Deliver us from the
darkness to the light…
From the illusion to
the truth…
Let there be peace
peace peace
শুরু হলো Vedakurt.
প্রায় ঘন্টা খানেক বাংলা কবিতা পড়লাম। পাঠ শেষে সব থেকে ইন্টারেস্টিং ছবি যা আমাকে উপহার দেওয়া হয়েছিল তা হলো
পনটাস, বোয়েল আর হেনরির।
পনটাস রাউদের আঁকা সেই ছবি
হেনরি দিনান্দারের আঁকা সেই ছবি
একজন ভদ্রমহিলা অনেকক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। বুঝতে পারছি কথা বলতে
চাইছেন কিন্তু ইতস্তত করছেন। বাংলাতেই জিজ্ঞাসা করলাম – অপনি বাঙালি তো? একটা
সলজ্জ হাসি হেসে হ্যাঁ বললেন। কোলকাতার মেয়ে। বাংলা কবিতা শুনে ছুটে এসেছেন।
বহুদিন পর বাংলায় কবিতা শুনলাম। খুব ভালো লাগছে জানেন।
বোয়েলের সাথে তাকে আলাপ করালাম।
দেখো আমার শহরের একটা মেয়ে।
আরো কিছুক্ষণ কথা বলার ইচ্ছা থাকলেও সুজোগ হলো না। অন্যান্যরা এগিয়ে এলো।
আমি কোলকাতায় গেলে দেখা হবে নিশ্চয়ই।
মাথা ঝুঁকিয়ে হেসে বিদায় নিলেন।
প্রভাসন আর জেলেনার সাথে আলাপ হলো। জেলেনা একগুচ্ছ কবিতা উপহার দিলো আমায়।
যার একটা এরকম –
Her skin gives off a
faint scent of something familiar,
but he cannot put a
finger on what it is.
Vanilla sugar milk
baby powder cocaine
White. She smells of
something white. And white she is,
white as snow high up
in the mountains,
untouched by city
smog, unspoiled by traces of urine.
She says that her
heart and thoughts are black as coal,
but he does not care.
He feeds on the light coming from
her skin.
(Under the Triple
moon/disenthralled, June 2010)
আর প্রভাসন আমার দিকে এগিয়ে দিলো গ্রাফিত্তি কোলকাতা থেকে প্রকাশিতব্য
গ্যারি কামিস্কির কবিতার বই ‘Sky Dreaming”-এর প্রচ্ছদের হার্ড
কপি, প্রচ্ছদের পুরো কাজটাই করেছে জেনি।
আর টিরুম বুক্স প্রকাশিত গ্যারি কামিস্কির কবিতার বই Romancing the Dead। প্রভাসন পিল্লাই আর
জেনি কেলারম্যান পিল্লাই দম্পতি সাউথ আফ্রিকার একটি ছোট প্রকাশনা টিরুম বুক্স
চালায়। সাউথ আফ্রিকার ডারবানের আরো একটি ছোট স্বাধীন প্রকাশনা এই টিরুম বুক্স। এই
স্বাধীন প্রকাশনা আর লেখকদের একটা কমিউনিটি সারা পৃথিবী জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে। আজকে
আমরাও তাদের একটা অংশ ভাবতে বড় আনন্দ হচ্ছিল। হাত ছুঁয়ে প্রভাসনকে ধন্যবাদ
জানালাম। আর জেলেনা আমার গালে একটা চুমু এঁকে দিলো।
ওখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম হৈ হৈ। এবার মদ্যপান।
এরিখ বলে একটি ২০-২২ এর তরুণ
ছেলে সমানে তার মুভি ক্যামেরায় আমার ছবি তুলে যাচ্ছিল। এবং সেটা হোটেলের ঘরে ফেরা
অবধি। ছেলেটা বারোজ ভক্ত। কাট আপে কবিতা লেখে। এক ধরণের wordrap দারুণ musical . এই ফিল্মটা হয়ত কখনো
You Tube-এ ও পোস্ট করবে তখন
পাঠক এই (wordrap)-এর মজা উপভোগ করার
জন্য আপনাদের আগাম আমন্রণ রইলো। ফিল্মের কাট আপের সঙ্গে শব্দের কাট আপের মজার
খেলায় আপনারাও অংশ নিতে পারবেন।
সেই বারোজ ভক্ত এরিখ
পরের দিন দেখি জেলেনা আমাকে একটা মেল করেছে –
Hej Subhankar,
Thank you for a lovely
evening yesterday! We are sorry we could not follow afterwards, it would have
been great to have a dinner together, but there was no way for us to make it. I’ve been at work for some time now, and will
work until late this evening.
One thing, I am not
sure if Pontus explained it, Swedes often forget that not in all other
languages you can build words of putting
them together without – separator and similar. So, when he used ‘Vedakort’, it
was made out of ‘Veda’ and ‘Kort’, where ‘Kort’ means a card, but also a picture.
Those girls he talked about (his inspiration for the workshop) listened to
chanting in Sanskrit while they were painting pictures. Therefore ‘Vedakort’.
Sweden is lovely in
summer, now it is so dark and cold. I guess you were around Gamla Stan? If you
have time, maybe see Vasa museet http://.www.vasamuseet.se/en/? It is just an old ship but it is interesting.
Have anice trip and
good day in Stockholm!
Cheers
Jelena
Friday, Nov 19, 2010.
পনটাস রাউদ অবশ্য আমাকে জানিয়েছিল ওটা Kort নয় Kurt এবং জেলেনার এই ম্যাজিকাল ব্যাখ্যাটাও তাতে টেকে
না। পরে জেলেনা আমাকে এটা নিয়ে আরেকটা মেল লেখে।
Hi Sub,
I am fine, thank you! :) It is quiet a cold winter, I am all set in spring coming, but I guess I will have to wait for few more months.
About Vedakort - now you have to know that I am a bit fuzzy in my head, but I am aware of that, so I am trying to filter and fix the result of my thoughts most of the time.
So, now when you know that about me - I wrote you this before (found in my mailbox) :) 'One thing, I am not sure if Pontus explained it, Swedes often forget that not in all other languages you can build words of putting them together without - separator and similar. So, when he used 'Vedakort', it was made out of 'Veda' and 'kort', where 'kort' means a card, but also a picture. Those girls he talked about (his inspiration for the workshop) listened to chanting in Sanskrit while they were painting pictures. Therefore 'Vedakort'.
But...I double checked that with my husband today (he is a Swede born in Stockholm). and he thought that I was wrong - the explanation he offered was :
'...so, when Pontus used 'Vedakort', it was made out of 'Veda' and 'kurt', where 'kurt' was the guy's name'.
So, the Swedes do put the names and a few words together building in one word , but this one was actually boring, it was just Veda and the guy's nane. I guess I have some imagination and I misheard kurt for kort and built my associations pretty freely. I am so sorry. But good that I checked with Joakim who speaks the same dialect as Pontus, he is certainly right with his explanation :) Now you know the truth, sorry for deceiving you, it was not on purpose.
I said to Joakim - 'but we both laughed vedakurt/kort back that evening, mine was not funny for real...although pretty much all made up'.
So, please do not write the vedakurt thing, since half of it was only in my head.
Oh, Sub. I am sorry if it does not make much sense.
But on the other hand - I am really glad if you liked something I wrote. I would be very happy and honored if you weant to use it. Whichever piece you like. I wanted to spend more time and get to know you when you were here, but I had no time because I had to go home and inject my medication. But , there was a lot of people you knew from via mail and their and your work, it was certainly nice to meet them IRL. I am happy I got to meet you anyway.
I saw you were in Athens and had a good time there. I love Greece, have such nice memories from there. We used to go there for vacations when I was a child with my parents. I was born and raised in Serbia, and Greece was close. Wonderful people witjh lot of warmth and quite a temper! And so friendly.
Also, I read the poetry you publish which I found on the net. I loved in particular one poem from Doug yopu published last year, he must have written that one when his mom was sick and dying.
I would be very much interested in one of your projects, please keep in touch
Hugs
Jelena
January 2011
এসবের পরেও জেলেনা কবি বলেই তার ব্যাখ্যাটাই আমার কাছে প্রিয়। কারণ সে ছবি লেখে। আর পনটাসের ব্যাখ্যাটা সত্যই বোরিং জেলেনা। হেই জেলেনা ধন্যবাদ। পুরোনো জাহাজটা আর দেখা হলো না এবার। গামলা স্ট্যানের ওল্ড টাউন দারুণ। বাড়ির জন্য সুইডিশ মার্মালেড কিনেছি দুজন বয়স্ক ভদ্রমহিলার থেকে। বো্য়েলকেও কিনে গিফট করেছি। জানতো বোয়েল ভেগান আর আমি প্রবল মাংসাশী তাই সে আমাকে নিয়ে গেল এক সসেজের দোকানের সামনে। দেখি উপর দিকে টাঙানো রয়েছে বিশাল বিশাল লাল সসেজ।
ওটা কী বলতো? -সে আমাকে জিজ্ঞাসা করে।
কী? -আমি জানতে চাই।
ওগুলো রক্ত ভরা সসেজ। তোমার মতো মাংসাশী লোকেরা খুব কেনে।
শুনে বমি ঠেলে উঠে আসছিল পেটের ভেতর থেকে। ছুটে মার্কেট থেকে বাইরে এলাম। বাইরে একটা দোকান থেকে মন ঠিক করার জন্য কিনলাম একগাদা পিকচার পোস্টকার্ড। আর পাথুরে রাস্তার উপর হলুদ আলোর মায়া পকেটে ভরে চললাম। কাল ভোরে এথেন্সের প্লেন ধরছি। এই ঠাণ্ডায় আর স্টকহোমে থাকতে পারলাম না। হয়ত কোনোদিন গরমের সময় দেখা হবে বন্দুগন।