সোমব্রেরো ফল আউট
রিচার্ড ব্রটিগান
ভবিষ্যৎ
‘আপনার জন্য আমি
সোমব্রেরোটা নিয়ে আসছি, মেয়র সাহেব’, কাজ হারানো লোকটি বলল আর নীচু হয়ে তুলতে গেল
সোমব্রেরোটা। চাকরি পাওয়ার এটাই তার শেষ সুযোগ এই গ্রহে আর সে ভগবানে বিশ্বাস করে
না। এটা কোনো অস্মিতার ব্যাপার নয় কারণ সে জানে স্বর্গেও কোনো চাকরি তার জন্য
অপেক্ষা করে নেই কারণ স্বর্গ বলে কিছু নেই।
এই রাস্তায় পড়ে
থাকা সোমব্রেরোটাই তার শেষ ভরসা।
‘না, আমি ওটা
নিয়ে যাব,’ মেয়রের পিসতুত ভাই বলে ওঠে, হঠাৎ সে বুঝতে পেরেছে যদি না সে
সোমব্রেরোটা তুলে আনে তাহলে কোনোদিনই সে মেয়র হতে পারবে না। তার কোনো রাজনৈতিক
পেশা জুটবে না। ইউনাইটেড স্টেটস-এর প্রেসিডেন্ট হওয়ার সু্যোগও থাকবে তার হাতের
বাইরে। ওয়াশিংটনে বড় বড় নেতাদের সাথে গাঘষাঘষি করতে পারবে না বা এ শহরে জুলাই
মাসের চার তারিখের বক্তৃতাও দিতে পারবে না।
সোমব্রেরোটাই
হচ্ছে তার ভবিষ্যতের চাবিকাঠি।
দুজন লোকের তাকে
খুশি করার এই হুড়োহুড়ি দেখে মেয়রের মজাই লেগেছে যদিও এর কারণ তার কাছে অজানা। ছোটো
শহরের একজন তুখোড় রাজনীতিবিদ এই মেয়র।
‘না!’ কাজ চলে
যাওয়া লোকটা চেঁচিয়ে ওঠে। ‘আমি সোমব্রেরোটা নিয়ে যাব’।
‘ওই সোমব্রেরোটা
তুমি ছোঁবে না’, পিসতুত ভাইও পালটা চেঁচায়।
ওরা দুজনেই যারা
সোমব্রেরোর দিকে এগোচ্ছিল থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, নিজেদের উগ্রতায় তারা নিজেরাই অবাক
হয়, একে অপরকে তারা ভালো করে দেখে নেয়।
মেয়র প্রায় বলতে
যাচ্ছিলেন, ‘থামো তোমরা। কী হয়েছে কী তোমাদের? তোমরা দুজনেই কি নির্বোধ? ওটা শুধু
একটা সোমব্রেরো’।
ব্যাপারটা তাহলে
সেখানেই মিটে যেত। জীবনটা অতটাই সাধারণ আর তাহলে ন্যাশানাল গার্ডদের ডাকতে হতো না
বা প্যারাসূট বাহিনী বা ট্যাঙ্ক নিয়ে আসতে হতো না বা সঙ্গে এয়ারফোর্সের সাহায্য।
বা ওই বক্তৃতা যা প্রেসিডেন্ট টেলিভিশনে দিলেন সেই ঘটনার নিন্দা করে যা হতে পারত
বা থার্ড ওয়ার্ল্ড দেশগুলোর এক বিশেষ কমিটি আমেরিকার বিরুদ্ধে ইউনাইটেড নেশান্সে
নিন্দা প্রস্তাব পাশ করত না।
সব থেকে বড়
ব্যাপার পৃথিবী জোড়া এই সতর্কতা ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা আর দা ইউনিয়ান অফ সোভিয়েট
সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক্সের ভেতর গড়ে ঊঠত না।
প্রায় একটা
নিউক্লিয়ার যুদ্ধের মুখোমুখি গিয়ে পড়ত না ব্যাপারটা, যদি মেয়র বলত। ‘ওটা শুধুই
একটা সোমব্রেরো। সরে দাঁড়াও। বরফ ঠাণ্ডা হলেও আমিই ওটা তুলছি। একটা সোমব্রেরো কারো
ক্ষতি করবে না’।
No comments:
Post a Comment