Saturday, October 28, 2017

চার্লস বুকাওস্কি-কে ভালোবেসে, ঘেন্না করে

লিন্ডা কিং-এর সাথে কথা হচ্ছিল ওর কাছেই জানতে পারলাম যে নতুন বইটা তার বেরিয়েছে সদ্য, এতদিন পর, ‘ম্যাড উইজা্‌’, তা লেখা চলছিল যখন লিন্ডা আর বুকাওস্কি সেই ঝোড়ো সময় কাটাচ্ছিলেন।  
আমি মনে করি আমার সমস্ত পাঠক পাঠিকাই প্রাপ্তমনস্ক তাই লিন্ডা কিং-এর এই বইয়ের যৌন অনুষঙ্গগুলো নিয়ে তারা বাড়তি লাফালাফির দিকে যাবেন না কারণ তারা জানেন শরীর এবং মন এক সূত্রেই বাঁধা। প্রেম থাকলে শরীর থাকবে। আর যৌনতাটা পাইখানা, পেচ্ছাপ পাওয়ার মতোই প্রাকৃতিক ঘটনা মাত্র।   
লিন্ডা কিং মূলত একজন ভাস্কর। তার করা বুকাওস্কির হেড বাস্টটির ফটোগ্রাফ আপনারা দেখে থাকবেন যা পৃথিবী বিখ্যাত। চার্লস বুকাওস্কির সাথে একসাথে কবিতার বইও বেরিয়েছে তার।

চার্লস বুকাওস্কিকে নিয়ে অনেক বই আছে কিন্তু কোনোটাই এ বইয়ের মতো নয়। এটা যেন আয়নার অন্য পাশ দিয়ে দেখা। ওদের পাঁচ বছরের প্রেমের ঝোড়ো জীবনের জীবন্ত দলিল। তাই অনেক সময়ই অপরিমার্জিত, কিছু না লুকোবার চেষ্টা করে বলে যাওয়া সেই আবেগের দিনগুলোর কথা, সেই গভীর প্রেম আর প্রেমহীনতার কথা, যা সরাসরি ধাক্কা মারে আমাদের হৃদয়ে কোথাও।






পঞ্চম ভাগ 



আমি ঠিক করে উঠতে পারছিলাম না পার্টিতে কী পরে যাব। পার্টিতে যাব বলে পাঁচটা জামা পরে দেখলাম। শেষে একটা পাগলাটে হলুদ জামা যার ঢলঢলে হাতা আর একটা ফ্লেয়ারড প্যান্ট পরবো ঠিক করলাম। কিন্তু পার্টিতে গিয়েই টের পেলাম ভুল করেছি। আমি ছাড়া আর কেউই সেজে আসেনি। লেখকরা নিজেদের জামা কাপড়ের প্রতি এত উদাসীন। কেমন তাদের দেখতে লাগছে তারা তা পাত্তাই দেয় না।   
‘ইনভিজিবল সিটি’-র সম্পাদক পল ভ্যাঞ্জেলিস্টের সঙ্গে আলাপ হলো। নীলি ইতি মধ্যেই ভাঁজ করে কাগজ রেডি করে ফেলেছে, ‘লাফ লিটারারি অ্যান্ড ম্যান দা হাম্পিং গান্স’, আর কাগজের কপি দিচ্ছে লোকজনকে। বুকাওস্কি আর নীলি দুজনেই কমেডিয়ানদের মতো ডায়লগ বলে চলেছে। ওরা এত দ্রুত কথা বলছিল আর তা এতটাই মজাদার ছিল যে ঘরের ভেতর অন্য সকলে হাসছিল খুব।
সারা দুপুরটা জুড়ে চলেছে পার্টি। বুকাওস্কি চাইছিল সবাই চলে যাক যাতে আমরা দুজনে একা হতে পারি। কিছুক্ষণ পর বুকাওস্কি সবাইকে বিদায় জানাল। আমি চাইছিলাম ওরা আরো কিছুক্ষণ থাকুক যাতে যা ঘটতে চলেছে তা আরো কিছুটা সময় আটকানো যায়।
নীলিকে দেখে মনে হচ্ছিল না তার আমাকে আদৌ পছন্দ হয়েছে আর অন্যরা ভাবছে আমি গ্রাম্য সম্পর্কে মাসতুত বোন যার পেটে কোনো বিদ্যে নেই।
২১ বছর বয়সে আমার বিয়ে ভেঙে যায় আর তারপর থেকে আমি প্রচুর বই পড়েছি ধর্ম, তত্ত্ববিদ্যা, মনোবিদ্যা, মনোবিদ্যা বিষয়ক বইপত্র, অধ্যাত্ববাদ ইত্যাদি যা হাতের কাছে পেয়েছি পড়েছি সব।
ঘন্টাখানেকও হবে না আমি পার্টিতে এসেছি, ইতিমধ্যে বুকাওস্কি বাড়ি পরিষ্কার করে ফেলেছে আর এখন আমরা দুজনে একা। আমি ভেবেছিলাম ওই মাসের পর মাস চুমু আর ছোঁয়াছুঁয়ির পর আমরা ধিরে সুস্থে একে অপরের কাছে আসব। একটা গোটা রাত কাটবে আদরে আদরে। বাচ্চাগুলো তাদের বাবার কাছে আছে তাই সকালের আগে আমাকে বাড়ি না ফিরলেও চলবে।
জামা কাপড় খুলতে না খুলতেই ও আমার ভেতর প্রবেশ করল আর দ্রুত সব শেষ হয়ে গেল।


ভালোবাসা সে মানুষটার জন্য যে যন্ত্রণায় আছে


ও আমাকে বেডরুমে নিয়ে গেল
খেলা করল আমার বুক দুটো নিয়ে
আমাকে এমন চুমু খেল
যেন পৃথিবীতে আমিই একমাত্র মেয়ে
আমি একটা জুতো খুলতে পেরেছিলাম
পৌঁছোতেই পারলাম না অন্যটার দিকে
আমি ভাবলাম, এই মানুষটার
ভালোবাসা চাই...বড্ড প্রয়োজন

ও আমার ভালোবাসা নিয়ে
ঢক ঢক করে খেয়ে চললো যতক্ষণ না তৃষ্ণা মেটে
আর আমার ভালোবাসা রাখল নিজের পকেটে

সে এখন লেখে নিজের যন্ত্রণা নিয়ে
কিন্তু কখনো সখনো সে আমার ভালোবাসা
বের করে তার দিকে চেয়ে থাকে
তারপর পকেটে রেখে দেয় ফের
আমার ভালোবাসা পকেটে নিয়ে
ও অনেক ভালো আছে
আমি কী আদৌ ভালো আছি?

লিন্ডা কিং
(‘মি অ্যান্ড ইয়োর সামটাইমস লাভ পোয়েমস’ , কিসকিল প্রেস, ১৯৭২)

আমি লেখাটা লিখি পরের দিন যখন বুকাওস্কি তার চিরাচরিত দুঃখ আর যন্ত্রণা নিয়ে কতগুলো কবিতা আমাকে পড়তে দিয়েছিল।
ভাস্কর্যটা প্রায় শেষ। ভেতরটা ফাঁপা করে দেওয়া গেছে। আমি ওর গোঁফ আর শয়তানের মতো দাঁড়ি লাগিয়ে দিলাম। বুকাওস্কি ভাবছিল আমি ওটাকে শেষে নষ্ট না করে ফেলি।
আমার ছেলে এসে দেখে বললো, ‘এটা শেষ হয়ে গেছে মা’। তানো-র চোখটা ভাস্করের। ও সবসময়ই ঠিকঠাক বলতে পারত।
‘আমার মনে হয় ও ঠিকই বলছে’, বুকাওস্কি বললো, ‘এটা সত্যিই আমি। এটা কী ধরণের ম্যাজিক কে জানে। আমার এটা দেখে এত আশ্চর্য লাগছে যে খুব বেশি কিছু বলতে পারছি না আমি’।
‘আমি যখন একটা ভাস্কর্য বানাই ওটা আমার সমস্ত শক্তি শুষে নেয় যেন। লেখালিখি শক্তি দেয় লেখার সময়। পরে যখন ভাস্কর্যটা শেষ হয়ে যায় আর তুমি ওটার দিকে তাকিয়ে থাক আর ওটার সাথে ঘর করো, তখন ওটা তোমার শক্তি ফিরিয়েও দিতে পারে’।  
‘আমি বুঝতে পারছি, ওটা তোমায় এতটা ক্লান্ত করে তোলে কেন। তুমি ওটার ভেতর তোমার রক্ত ভরে দাও। এটা আমাদের বাচ্চা, আমাদের প্রথম সন্তান’।
‘এটার কতগুলো ছবি তুলে রাখা দরকার। যদি ভেঙে যায় বা পোড়ানর সময় নষ্ট  হয়ে যায়’।
আমরা বাইরে এলাম। গাড়ির মাথায় ভাস্কর্যটাকে বসিয়ে ওকে দাঁড় করালাম তার পাশে, আর ছবি তুললাম। ওদের জমজ ভাইয়ের মতো লাগছিল।
‘বাইরে খেয়ে আমাদের সেলিব্রেট করা উচিৎ, যাই চলো কোথাও’, সে বললো।
আমরা ওয়াইন আর মোমবাতি জ্বালিয়ে সেলিব্রেট করলাম। মাংসের স্টেক অর্ডার দিলাম।
বাচ্চারা সপ্তাহের শেষে বাবার কাছে চলে গেলে আমাদের হানিমুন শুরু হলো।

সেই ছিল
সেরা
তোমার মুখোমুখি
শুয়ে
তোমাকে চুমু খাওয়া
একশ রকম ভাবে
উষ্ণ আরো উষ্ণ হয়ে ওঠা

তোমার গোঁফ নিয়ে অনুযোগ করলাম আমি
আর খেপালাম তোমায়
বলতে চেষ্টা করলাম সেসব
যা তোমাকে হাসাবে
আর টের পেলাম সেই উষ্ণতা
যা আসছিল তোমার থেকে
বেড়ে চলেছিল যা ক্রমাগত
যখন হাসছিলাম আমরা
চুমু খাচ্ছিলাম আর ছুঁয়ে দেখছিলাম
একে অপরকে

আমি তোমার দৃঢ় লিঙ্গ
আমার মধ্যে রাখলাম
ফুটোটার একটু ওপরে
টের পাচ্ছিলাম তিরগুলোকে
যা আমাকে ফুঁড়ে যাচ্ছে
আমার মুখ তোমার মুখে
আমার বুক
তোমার খোলা বুকে লাগানো
আমার মনে হচ্ছিল যেন
আমি গলে যাচ্ছি তোমার মধ্যে
যেন একটা মেঘ
পাহাড়ের ভেতর দিয়ে চলে যাচ্ছে
শুধু আমি ভেতরে
তোমার সাথে

অনেক খেলার পর
ঘষাঘষি আর চুমুর পর
বড় সুন্দর ছিল
যখন তোমার লিঙ্গ
ঠেলে ঢুকল আমার ভেতর
আঘাত করতে আরো আরো
অনুভূতির জায়গাগুলোকে।

লিন্ডা কিং
(সুইট অ্যান্ড ডার্টি, ভ্যাগাবন্ড প্রেস, ১৯৭২)

বুকাওস্কি আমাদের সেই অসাধারণ প্রথম রাত্তিরের পর আবার চিঠি লিখল যার খানিকটা এরকম –
‘তোমাকে আমার চিরকাল মনে থাকবে, সেই কাফেতে যখন আমরা খেতে চেষ্টা করছিলাম সেই অশ্লীল বড় মাংসের স্টেকগুলো, মাথার এক গোছা চুল নেমে এসেছে তোমার, প্রায় খোঁচা মারছে তোমার চোখে যখন তুমি কথা বলছিলে। তুমি আরো বেশি বেঁচেছিলে স্বর্গের সমস্ত জলকুমারীর থেকেও বেশি, শুধু তুমি তা জানতে না। হয়ত ব্যাপারটা বোকা বোকা কিন্তু তোমার যোনি নয় বা তোমার শরীর নয় বা তোমার গলার স্বরও নয় বা তোমার চুল বা যেভাবে তুমি চলাফেরা করো...কিন্তু তোমার চোখ...তোমার চোখ...আমি সারাটা জীবন যার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি...যেন একটা বাতাসের টানেলে পড়ে যাওয়া যা আমাকে তোমার গভীরে নিয়ে যায়, শতাব্দী আর সমস্ত সময়, সমস্ত গোপনতা পেরিয়ে, সমস্ত বইপত্র পেরিয়ে, সমস্ত স্বর পেরিয়ে, সমস্ত কিছু সব পেরিয়ে...তোমার চোখ, পৃথিবীর সমস্ত রস যে দুটো বিন্দুতে জমা হয়েছে আর তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি পারিনা পুরোটা নিয়ে তৃষ্ণা মেটাতে, হে ভগবান...তোমার চোখ...আমি বোঝাতে পারছি না...আমি ওদের ভেতর সাঁতরাতে পারি’।

ও আমাকে দুটো কবিতা পাঠাল, ‘স্টাইল’ আর ‘দা শাওয়ার’ যা পরে প্রকাশিত হয়েছিল ‘মকিং বার্ড উইস মি লাক’-এ।
আমি যাদের চিনতাম তাদের কেউই আমার আর বুকাওস্কির সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিল না। যার শুরু আমার বোনেদের দিয়ে। ওরা ওর মদ খাওয়া নিয়ে আপত্তি করছিল, আমাদের বাবা ছিল মোদো মাতাল আর তার কাজকারবার ঠিক ছিল না মোটেই, আর বুকাওস্কির সাথে মদ খাওয়ার বিপদ নিয়ে।
‘হয়ত তুমি বাবা-কে মিস করছ। বুকাওস্কির বয়স অনেক বেশি। আগে ছিল পাস্তেরনাক এখন বুকাওস্কি। তোমার জীবন কি বুড়ো লোকদের নিয়ে আঁটকে গেল’?
আমার বান্ধবী হেলগা আমাদের বলতো ‘বিউটি অ্যান্ড দা বিস্ট’। যখন প্রথম ওদের আলাপ করাই সে বললো, ‘লিন্ডা কোন পাথরের তলা থেকে একে খুঁজে পেলে’? হেলগা ছিল এল-এর প্রথম বারটেন্ডার এবং স্পষ্টভাষী।
পরে যখন মায়ের দেখা হলো ওর সাথে, মা বললো, ‘ওর যা বয়স হয়ত ওর সাথে আমার ডেটে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু আমি কখনোই এমন লোকের সাথে ঘুরতে যাব না যে এসব ফালতু লেখা লেখে। কী যে সব নোংরা ভাষা ব্যবহার করে বলার নয়’।
বুকাওস্কির কাছেও এগুলো অজানা ছিল না। সে লিখলো-
‘এই পুরো ব্যাপারটাতে আমার মন খারাপ হচ্ছে ক্রমাগত যে তোমাকে তোমার সব বোনেদের আর বন্ধুবান্ধব্দের সাথে ঝগড়া করতে হচ্ছে একা একা। তারা তোমার ভালোই চায়, আমি জানি। কিন্তু তারা একটা জিনিস ভুলে যায় যে তুমি আমাকে ওদের থেকে অনেক বেশি ভালো করে জানো। এইসব ঝামেলা যুদ্ধ এড়িয়ে আমরা যাতে একসাথে থাকতে পারি, আমি তাই চাই’।
সন্ধ্যাবেলা ওর বাড়ি গেলে দেখতাম ও আঁকছে। কখনো ও রান্না করত, কাঁচা লঙ্কা দেওয়া স্টু। ওর বাড়ি যতই নোংরা হোক আমি পরিষ্কার করার চেষ্টা করিনি। এটা আমি মনে করতাম আমার নারীস্বাধীনতার একটা বিষয়। ও আমার বাড়ি পরিষ্কার করেনি আমিও ওর বাড়ি পরিষ্কার করিনি। যখন রান্নাঘর থেকে খুব বেশি পচা গন্ধ ছাড়ত তখন আমি ওকে আমার বাড়ি থাকতে বলতাম।
একদিন ও আমাকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করল গাড়ি করে সমুদ্রের ধারে ওর মেয়ে মারিনা’র সাথে আমি দেখা করতে যেতে চাই কিনা? আমরা মারিনাকে তার মায়ের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তুলে নিয়ে গেলাম ভেনিস বিচে। মারিনা দেখতে ঠিক ওর বাবার মতো। কোমর অবধি নেমে এসেছে তার খয়েরি চুলের বেণী। নাক ভর্তি ইতস্তত দাগ। ও একটু লাজুক। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম ও বাবাকে খুব ভালোবাসে। বুকাওস্কি আমাদের জন্য দুপুরের খাবার কিনে নিয়ে এলো। আমরা বিচে বসে সে খাবার খেলাম। মারিনার সাথে ওর একটা সোজা আন্তরিক সম্পর্ক চোখ এড়াল না। ও মারিনার থেকে ওর স্কুলের সব ক্থা শুনতে লাগলো। আর মারিনা আর কী করতে চায় সে কথাও। মারিনা কতগুলো ছবি এনেছিল যা সে এঁকেছে শুধু বুকাওস্কির জন্য।
এরকমই একটা ট্রিপে আমরা এসে থামলাম এক কবি এবং পেইন্টারের বাড়ির সামনে। স্টিভ রিচমন্ড। ও প্রায় বিচের সামনের দিকে ছবির মতো একটা সান্টামনিকা কটেজে থাকত। মাছের সব রঙিন ছবি এঁকে সাজানো সে বাড়ি।
আমাকে বুকাওস্কির সঙ্গে প্রথম দেখে সে বললো, ‘আরে তোমার খবর কী গো? শেষবার যখন তোমায় দেখি তখন প্রায় কবরে যাওয়ার জন্য তুমি তৈরি আর এখন দেখ তোমার বয়স প্রায় কুড়ি বছর কম মনে হচ্ছে’।
বুকাওস্কি আমার সাথে আলাপ করালো যেন কারণটা আমিই।
সে রাতে সে আমাকে একটা চিঠি লেখে-
‘প্রিয় লু,
তুমি জানো না রিচমন্ডের ওখানে তুমি কী দারুণ ব্যবহার করেছ। সমস্ত বালছাল বাদ দিয়ে তোমার আছে সেই জীবনের গতি...তুমি ক্ষরাও। আমি জানি জেরি আমার প্রশংসার বাগধারা মানবে না, কিন্তু তাতে আমার কিছু করার নেই, কারণ এটাই সত্যি। তোমার সবকিছু ছড়িয়ে যায় অন্য জায়গায় আর তাদের সুন্দর করে তোলে। তোমার গাড়ি, আমার কাছে বোধহয় একটা গরম পিঠের মতো, আমার ইচ্ছে করে কাঁটা চামচ নিয়ে টুকরো করে কেটে খাই। হে ভগবান, মেয়ে তুমি এই বুড়ো বাঘটাকে চড়িয়ে দিয়েছ স্বর্গের কাছে। খারাপ সময় কি আর নেই, আছে কিন্তু তা আমারই মগজ প্রসুত...এই পাগল, এই পাগল, কী হয়েছে তোমার? এই পাগল।
তুমি এত মজাদার, তুমি যখন আমাকে আর বাঁচাতে আসো না, সমালোচনা করো না আমার, তখন ভালো লাগে না সেটা...কোরো না এমন। আমার ভালো লাগে কেউ যখন আমায় পরিহাস করে আর কাটা ছেঁড়া করে আর অপমান করে। এটা আমার চরিত্র...সেই অভিনেতা, সেই লেখকটা যে আমার ভেতর আছে ... আমার ভালো লাগে যখন আমাকে লোকে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলে একেবারে ... ছবিটার উপর আলোটা তাতে জ্বলজ্বলে হয়ে থাকে।
সব থেকে খারাপ হলো এটা শোনা, ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবি’। আমার চোয়াল ঝুলে যায় ওটা শুনলে। ওটা একটা চাপ। গলা টিপে ধরে। সে জন্যই তোমার শরীর আর মন আমার দরকার। আমার দুটোই চাই। তোমার দুটোই আছে। আমার দুটোই চাই। তুমি দুটোই কেমন সুন্দর করে আমায় দাও। আমি জীবনে এত ভালোবাসিনি। তুমি যদি চলেও যাও তবু এগুলো থেকে যাবে আমার কাছে। ওরা কিছুতেই এইসব দিন রাত্রি আমার থেকে নিতে পারবে না। ওরাও যদি চলে যায় তবু ওরা থেকে যাবে নাড়িভুঁড়ির গভীরে যেখানে ওরা বিশ্রাম নেয়, নড়েচড়ে বেড়ায় আর থেকে যায়’।   
    



No comments:

Post a Comment